আমাদের মস্তিষ্কে যখন রক্তনালী বাধা গ্রস্ত বা জমাট বেধে কিংবা অতিরিক্ত রক্তের চাপে পাতলা রক্তনালী ফেটে গিয়ে ব্রেইনে অক্সিজেনের পরিমান ব্যাহত হলে ব্রেইন কোষ গুলো মারা যায়। ঠিক তখন কোষ গুলো তার কর্মক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। যার ফলে আমাদের শরীরের ডান/বাম যে কোন এক পাশ অবশ বা প্যারালাইজড হয়ে যায়।
স্ট্রোকের পাচটি শতর্ককারী উপসর্গ ও পরামর্শ চিকিৎসকের নিকট থেকে জেনে নিন |
আমরা একে গ্রামে বা মফস্বল এলাকায় জীনে ধরা/ভূতে ধরা থেকে শুরু করে নানা কুসংস্কার রটিয়ে দেয়। তা হলো না জানার ফল।
স্ট্রোক হলো একটি মেডিকেল ইমার্জেন্স। তা নিয়ে একটু ও অবহেলা করা যাবে না।
স্ট্রোকের পাচটি গুরুত্বপূর্ন উপসর্গ জানা থাকলে সাথে সাথে নিজেরাই ইমার্জেন্স বুঝে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে এবং একজন রোগীর বড় ধরনের অঘটন থেকে বেচে যেতে পারে।
চলুন জেনে নিই উপসর্গ গুলোঃ
০১) হঠাৎ অবশ হওয়া
শরীরের যে কোন এক পাশের অংশ যেমন মুখ,হাত,পা হঠাৎ অবশ হয়ে যেতে থাকলে।
০২) হঠাৎ কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হওয়া
যদি দেখেন কথাবার্তা এলোমেল, ঠিকমত কথা গুছিয়ে না বলা, কথাবার্তা না বুঝল তাহলে একটু ভাবনার কারন হতে পারে।
০৩) হঠাৎ দেখতে অসুবিধা
এক চোখ/দই চোখে ঠিকমত দেখতে না পারা,ঝাপসা দেখার মত উপসর্গ থাকলে।
০৪) হটাৎ হাটতে অসুবিধা
একজন সুস্থ মানইষ যদি তার স্বাভাব্জক হাটাচলাফেরায় অসুবিধা হলে, শরীরের ভারসাম্য ঠিক মত ধরে না রাখলে, এমনকি ব্রেইনের কোওর্ডিনেশনে জামেলা হলে আপনার ভাবনার কারন থাকতে পারে।
০৫) ০৫) প্রচুর মাথা ব্যথা
কোন কারন ছাড়াই যদি হঠাৎ প্রচুর মাথা ব্যথা হয়।
আমেরিকার স্ট্রোক এসোসিয়েশন জরুরীভাবে ঘোষনা করে যাদের এই উপসর্গ গুলো দেখা যাবে তাদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
আপনি কি করে বুঝবেন?
যদি কারো স্ট্রোক হয়েই যায় তাহলে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন নিচের সংক্ষিপ্ত টার্ম গুলোকে মনে রাখার চেষ্টা করুন। সংক্ষিপ্ত শব্দটি হচ্ছে ইংরেজিতে- FAST
০১) F-face মুখ-মুখের যে কোন এক দিক ঝুলে যাওয়া
০২) A- arm - হাত অবশ হয়ে যাওয়া
০৩) S - speech - স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তায় সমস্যা
০৪) T- Time - দ্রুত সময়ে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া।
নিচের ছবির দিকে লক্ষ্য করুনঃ
স্ট্রোক প্রতিরোধে কি করব?
এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। স্ট্রোক কোন বয়স বেধে হয় না। যে কোন বয়সেই স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা থাকে। স্ট্রোক প্রতিরোধে নিজেকে সচেতন হওয়াই খুব জরুরী বিষয়। নিন্মোক্ত কাজ গুলো আমাদের অবশ্যই করতে হবে।
০১) নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে এক্সারসাইজ করা। এখানে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের ভূমিকা খুব বেশি।
০২) নিজের স্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা সেজন্য একজন পুষ্টিবিদ ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক সাহায্য করতে পারেন।
০৩) ফ্যাট জাতীয় খাবার পরিহার করে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট ধরে রাখা।
০৪) নিজেদের ব্লাড প্রেসার নিয়মিত চেক করা।
০৫) শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক রাখার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শমত কাজ করা
মনে রাখবেন, আমাদের প্রত্যেকটি পোস্ট একজন চিকিৎসক লিখে থাকেন। আপনার এ সংক্রান্ত কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্টে/মেইলে জানাতে পারেন।
মেইল-physioqawsar01@gmail.com
Post a Comment